মিনা বাজার
আজিমপুর মিনা বাজার আউটলেটে গেলাম সেদিন। উবার আসতে দেরি করতেসে তাই হুদাই এটা ওটা নাড়তেসি। ঢাকা ভার্সিটির দিকে নাকি পোলাপান সব গেইট আটকাইয়া নিজেদের ক্যান্টনমেন্ট হিসেবে ঘোষনা করেছে। তাই এলাকা জুড়ে বিশাল জ্যাম। উবার চালক খালি বলে আসতেসি, কিন্তু আসার নামগন্ধ নাই।
শেলফে দেখলাম মোয়া, নাড়ু এইগুলা রাখা আছে। কিন্তু প্রচুর চাইনিজ তেলাপোকা ঘুরঘুর করতেসে সেগুলার উপর। একটা চিড়ার প্যাকেটের ভিতরেও দেখলাম কয়েকটা আছে।
একজনরে ডাক দিয়ে দেখাইলাম, বেডি কিছু না বলে চিড়ার প্যাকেট নিয়ে চলে গেল। আমি আর মোয়া কিনলাম না। কয়েকটা ড্রিঙ্কস নিয়ে কাউন্টারে চলে গেলাম। টিন ফুটা কইরা অন্তত চাইনিজ তেলাচুরা ঢুকতে পারবে না।
- ভাই আপনাদের খাবারের শেলফে প্রচুর তেলাপোকা। এইগুলা তো ফালাই দেয়া দরকার।
কাউন্টারের ছেলেটা ব্যাপক ব্যস্ত। শুধু বলল- "তেলাপোকার ঔষধ দিতে হবে।"
- তেলাপোকার ঔষধ পাশের শেলফেই আছে। আমি দিয়ে দেই?
পোলায় কোন কথা বলে না। একটা হিমু হিমু ভাব আছে এর মধ্যে। জগতে দুই-চাইরটা তেলাপোকা থাকলেই কি আর না থাকলেই কি?
- তেলাপোকা তো কামড় দেয় না।
এই মহাজ্ঞান লাভ করে আমি মিনা বাজার থেকে বের হয়ে আসলাম। অর্বাচীনের সাথে তর্ক করে কি লাভ? এই দেশের মানুষ যেরকম সুপারশপও সেরকম হবে। এইখানে তেলাপোকা আর ইঁদুর থাকাটা খুব স্বাভাবিক!
একজন ম্যাজিট্রেটকে ফেইসবুকে মাঝেমধ্যেই দেখি ব্যপক ভাবের সহিত সব জায়গায় গিয়ে তদারকি করেন। কিন্তু খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে দেশে কোন ট্রেইনিং দেয়া হয় কিনা জানি না। দোকান খোলার আগে সার্টিফিকেশন লাগে কিনা জানি না।
এরা যদি মদ বেচত তাইলে অবশ্য আমি মাইন্ড করতাম না। মদে কোন ভেজাল নাই। পুরান মদ টেস্টি হয়।
মিনা কার্টুন দেখতাম ছোটবেলায়। সে দৈত্যের কাছে স্বপ্নে ল্যাট্রিন চায়, কেন চায় আজও আমি বুঝি নাই। আমরা ল্যাট্রিন বিপ্লবে সফল হয়েছি। ইন্ডিয়ানরা নাকি এখনও খোলা আকাশের নিচে হাগে। প্রাকৃতিক কাজ প্রকৃতির সান্নিধ্যেই উত্তম।
আমরা উত্তম জাতি। আমরা বিপ্লবী।
উবার আসছে। সে খিস্তি করতেসে। রাস্তায় জ্যাম নাকি ইচ্ছা কইরা লাগাইসে। আমি জিগাইলাম- "লাল স্বাধীনতা কেমন লাগছে।"
- ভাই, মজা কইরেন না। পছন্দ না হইলে নামায় দিবো কিন্তু।
- উত্তম...। আমি চুপ করে গেলাম। তার অবশ্যই ব্যক্তিগত স্বাধীনতা আছে আমাকে নামিয়ে দেয়ার। গন্তব্যে গিয়ে তাকে একটা পাঁচ তারা দিয়ে দেবো।