শহরের বৃষ্টি, ২৬শে জুন

বাইরে ধুমাইয়া বৃষ্টি পড়তেসে। আরাম করে একটা ঘুম দিসিলাম। এই সময় হাসিব ভাই ফোন দিলো। তার সাথে আমার কোন দরকার নেই আজকে। মাঝে মধ্যে আড্ডা দিতে যাই, এলাকার বড়ভাই। মাগনা চা-বিড়ি খাই।

– ভাই কি খবর বলেন!
– তোর ওইখানে বৃষ্টি হচ্ছে না?
– নাতো…। আমিতো জানালার পাশে বসে আছি কোন বৃষ্টি নাই। আকাশ অবশ্য মেঘলা, যে কোন সময় কুত্তা বিলাই শুরু হয়ে যাবে।
– কি কস? আমার এইখানে তো মুষলধারে বারি ঝরছে। ঝরঝর শ্রাবনও বরষায়… আজি মন চায়…।

হাসিব ভাইয়ের একটু পোয়েট্রি করার স্বভাব আছে। কথায় কথায় তাই কঠিন সব বাংলা বলেন। এইগুলা শুনলে আমার শরীর জ্বলে।

– ধুর বাল…। ভাই আপনে ফোন দিসেন কেন?
– আমি মতিঝিল আসছিলাম, ব্যাংকের কাজে। আইসা বৃষ্টিতে আটকাইয়া পড়সি। এইদিকে আম্মায় কইতাসে বাজার লইয়া যাইতে। তোর ঐখানেতো বৃষ্টি নাই। তুই ভাই একটু কষ্ট কইরা বাসায় বাজারটা দিয়া আসতে পারবে?
– আমার কাছে টাকা নাই।
– টাকা চাইসে কেউ তোর কাছে? সব কিছু লিটনের দোকানে প্যাকেট করা আছে। আমি ফোন কইরা বলে দিসি। তুই ভাই একটু কষ্ট করে দিয়ে আয়। তোরে সন্ধ্যায় ট্রিট দিমু। আমি এখন বাসায় যাইতে পারুম না।
– আমারে ডেলিভারি বয় মনে হয়?
– তোগো এই এক সমস্যা! বড় ভাই কিছু করতে বললেই ইগোতে লাগে।
– সহমত ভাই।
– মানে?
– মানে হ… লাগে।
– ভাই, প্লিজ জরুরী কাজে আছি, একটু করে দে।
– আপনে কোন ব্যাংকে গেছেন? স্পার্ম ব্যাংক?
– তুই কিন্তু বেয়াদবি করতাসস?
– আচ্ছা সরি, বাজার দিয়া আসতেসি, কিন্তু আমারে বাকার্ডি খাওয়াতে হবে। বৃষ্টির দিন…।
– ঠিক আছে, সন্ধ্যা আসি।

টুট করে লাইন কেটে দিলো বড় ভাই রুপের প্লেবয়। আমি জানি সে তার গার্লফ্রেন্ডের বাসায় গেছে। বৃষ্টির সময় শালায় গেছে ফুর্তি করতে আর আমি ঘুম ফালায়া বেগার দিমু। অবশ্য বেগার যাবে না খাটুনি। হাসিব ভাইয়ের দিলখোলা। কে জানে সন্ধ্যায় বাকার্ডির সাথে চিকেন পোলাও হয়ে যেতে পারে।

বড় ভাই আছে বলেইতো আমরা একটু আনন্দ ফুর্তি করতে পারতেসি।

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন