পোস্টগুলি

জুন, ২০২৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

শহরের বৃষ্টি, ২৬শে জুন

বাইরে ধুমাইয়া বৃষ্টি পড়তেসে। আরাম করে একটা ঘুম দিসিলাম। এই সময় হাসিব ভাই ফোন দিলো। তার সাথে আমার কোন দরকার নেই আজকে। মাঝে মধ্যে আড্ডা দিতে যাই, এলাকার বড়ভাই। মাগনা চা-বিড়ি খাই।

– ভাই কি খবর বলেন!
– তোর ওইখানে বৃষ্টি হচ্ছে না?
– নাতো…। আমিতো জানালার পাশে বসে আছি কোন বৃষ্টি নাই। আকাশ অবশ্য মেঘলা, যে কোন সময় কুত্তা বিলাই শুরু হয়ে যাবে।
– কি কস? আমার এইখানে তো মুষলধারে বারি ঝরছে। ঝরঝর শ্রাবনও বরষায়… আজি মন চায়…।

হাসিব ভাইয়ের একটু পোয়েট্রি করার স্বভাব আছে। কথায় কথায় তাই কঠিন সব বাংলা বলেন। এইগুলা শুনলে আমার শরীর জ্বলে।

– ধুর বাল…। ভাই আপনে ফোন দিসেন কেন?
– আমি মতিঝিল আসছিলাম, ব্যাংকের কাজে। আইসা বৃষ্টিতে আটকাইয়া পড়সি। এইদিকে আম্মায় কইতাসে বাজার লইয়া যাইতে। তোর ঐখানেতো বৃষ্টি নাই। তুই ভাই একটু কষ্ট কইরা বাসায় বাজারটা দিয়া আসতে পারবে?
– আমার কাছে টাকা নাই।
– টাকা চাইসে কেউ তোর কাছে? সব কিছু লিটনের দোকানে প্যাকেট করা আছে। আমি ফোন কইরা বলে দিসি। তুই ভাই একটু কষ্ট করে দিয়ে আয়। তোরে সন্ধ্যায় ট্রিট দিমু। আমি এখন বাসায় যাইতে পারুম না।
– আমারে ডেলিভারি বয় মনে হয়?
– তোগো এই এক সমস্যা! বড় ভাই কিছু করতে বললেই ইগোতে লাগে।
– সহমত ভাই।
– মানে?
– মানে হ… লাগে।
– ভাই, প্লিজ জরুরী কাজে আছি, একটু করে দে।
– আপনে কোন ব্যাংকে গেছেন? স্পার্ম ব্যাংক?
– তুই কিন্তু বেয়াদবি করতাসস?
– আচ্ছা সরি, বাজার দিয়া আসতেসি, কিন্তু আমারে বাকার্ডি খাওয়াতে হবে। বৃষ্টির দিন…।
– ঠিক আছে, সন্ধ্যা আসি।

টুট করে লাইন কেটে দিলো বড় ভাই রুপের প্লেবয়। আমি জানি সে তার গার্লফ্রেন্ডের বাসায় গেছে। বৃষ্টির সময় শালায় গেছে ফুর্তি করতে আর আমি ঘুম ফালায়া বেগার দিমু। অবশ্য বেগার যাবে না খাটুনি। হাসিব ভাইয়ের দিলখোলা। কে জানে সন্ধ্যায় বাকার্ডির সাথে চিকেন পোলাও হয়ে যেতে পারে।

বড় ভাই আছে বলেইতো আমরা একটু আনন্দ ফুর্তি করতে পারতেসি।

ঈদ ২০২৪

ঘুরতে বের হইসিলাম। চারিদিকে ঈদের আমেজ। কুরবানীর ঈদ আর চারদিন পরেই। রাস্তাঘাটে গরুর গোবরের প্রবল উপস্থিতি জানান দিচ্ছে, শহরে নতুন মেহমান এসেছে।

ঢাকায় রিকশার সংখ্যা বেড়ে গেছে হঠাত করেই। এরা কোন গানিতিক সূত্র মেনে বাড়ে না। দুইজন থেকে হঠাত ছয়জন হয়ে যায়। আবার বৃষ্টি দেখলে দশজন হয়ে যায়। ভাড়া অবশ্য ক্রিকেটের ডার্কওয়ার্থ লুইসের পদ্ধতি মেনে দাবি করে তারা।

যাবো ধানমন্ডি, দরদাম করে ১০০ টাকার ভাড়া ১৩০ টাকায় ঠিক হলো। মনে মনে ভাবলাম, থাক গরীব মানুষই তো। দুইটা মালবোরো খাইতেই তো আমার ৩০ টাকার বেশি চলে যায়।

রিকশা থেকে নামার পর শুরু হলো তার কাহিনী।

– আপনারে দেইখা, মনে হতেসে আপনে খুব ভাল মানুষ। একটা কথা বলি?
– বলেন।
– আমার মা গ্রামে অসুস্থ তার, দুইটা কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। স্যার যদি কিছু সাহায্য করতেন।

একথা শোনার পর ১০০ টাকার ভাড়া ১৩০ টাকায় ঠিক হবার জন্য নিজেকে মনে মনে দুইবার লাথি দিলাম। শালায়তো ঘাগু মাল! দুধ দোয়ানোর চেষ্টা করতেসে।

– আমি নিজেও অসুস্থ। সেইটার জন্য কি তোমার কাছে ডিস্কাউন্ট চাইছি?
– আপনে অসুস্থ?
– হ… আমার ব্লাড ক্যান্সার। কয়দিন বাঁচি ঠিক নাই।

হতভম্ব রিকশাওয়ালাকে আর কিছু বলতে না দিয়ে হাঁটা দিলাম। শালা গরীব ভালো হইতে পারে, কিন্তু ছোটলোক মাদারটোষ্টই হবে। আজকে মন ভালো তাই এর সাথে ইতরামি করলাম না।

বন্ধু ধননঞ্জয় এর বাসায় আসছি। এইটা হিন্দু হইলেও আমার খুব পেয়ারের দোস্ত। দুই, হাত খুইলা খরচ করে। বিশেষ করে মাল খাবার সময় দুই পেগ পেটে পড়লেই সবার বিল সে দিয়া দেয়। মালে মালে মালতো ভাই হয়ে যাই তখন আমরা। তারে এইবার কুরবানীর দাওয়াত দিতে হবে। গরুর মাংস না খাউক, মুরগীর রোষ্টতো খাইতে পারবে। তাছাড়া এইরকম একটা উৎসবের সময় কাউরে ফালায়া রাখা ঠিক না। মানবতা বলে একটা কথা আছেনা। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।

ধননঞ্জয় এর নামে যে কে রাখসিলো? শালার নাম শুনলেই মনে হয় প্যান্টের চেইন খুলে দেখতে। তারে অবশ্য আমি আদর করে ধনু ডাকি। ধন ডাকতে পারতাম, কিন্তু তাতে তার গার্লফ্রেন্ড মাইন্ড করবে। ঐটা নাকি তার অধিকার। একসাথে আড্ডা দিতে গেলে যখন ধননঞ্জয় এর গার্লফ্রেন্ড তারে আদর করে “ধন” বলে ডাকে, তখন মাঝে মাঝে কনফিউজড হয়ে যাই, ডাকে কারে?

ধনুর বিল্ডিং এর দারোয়ান আমারে দেইখা লম্বা সালাম দিলো। এই এক সমস্যা ঈদ আসলেই সবাই লম্বা সালাম দেয়। তিনহাত বাড়ায় দেয় বকশিসের জন্য। আরে বেটা এই সালামের কোন মানে আছে? বকশিসের আশায় সালাম দিলে তোমার সোয়াব হবে? আমি দারোয়ানরে দেইখাও না দেখার ভান করলাম। বড়লোকেরা সাধারণত দারোয়ান জাতীয় প্রানীদের দিকে তাকায় না। এটাই অভিজাত স্টাইল। আমার বাড়ির দারোয়ান মাসুদ অবশ্য আমারে দেখলে দৌড় দেয়, নাইলে লুকাইয়া থাকে।

– স্যার, ঈদের বকশিস দিবেন না?
– না দিবো না। তোমারা সালাম দেয়া হয় নাই। স্লামালিকুম কি?
– সালাম দিসিলাম।
– সালাম দিতে হয়, আসসালামু-আলাইকুম পুরা বইলা। তুমিতো শুদ্ধ ভাবে বলতে পারো নাই। তুমি কি বিসিএস ফেল?

দারোয়ানের চেহারায় শঙ্কার ছাপ। বড়লোকদের সাথে তর্ক করতে হয়না। তাতে ভাতে মরার সম্ভাবনা থাকে।

– তুমি ধনুরেও সালাম দাও?
– জ্বী স্যার দেইতো।
– কেন দাও? ও তো হিন্দু… ওরে নমস্কার বলবা।
– জ্বী আচ্ছা।
– সালামের মানে জানো?
দারোয়ান মাথা নাড়ায়। তাতে হ্যাঁ এবং না দুইটাই বুঝা যায়। আমি কনফিউজড হয়ে গেলাম। এই ব্যাটায় কি মশকরা করে। কনফিউজড করি আমি মানুষকে আর সে কিনা আমার সাথে বিটলামি করে। এই ব্যাটাতো একটা ছোটলোক।

– শোনো… সালামের মানে হচ্ছে, সামনের জনের জন্য শান্তি কামনা। তুমি আমার শান্তি কামনা করতেস না, তুমি বকশিস কামনা করতেস। কাজেই বকশিস পাবা না। আরবিতে কিভাবে বকশিস কামনা করতে হয় সেটা শিখে তারপর বকশিস নিবা।

আমি অনেক জ্ঞান দেয়া হয়েছে এই ভঙ্গিতে গেইট পার হয়ে ভিতরে ঢুকলাম।

পৃথিবীর বয়স

শুক্রবার দিনটা আমার খুব পছন্দের। সারাদিন আরাম করে ঘুমানো যায়। আমি দুই-তিনটা মুভি দেইখা ফেলি একদিনেই।

বোরিং লাগলে মাঝে মধ্যে নিচে গিয়া মাসুদরে একটু গুতা দিয়ে আসি। সে শ্রমিক দিবসের মানে বলতে না পারায় তার বেতন কাটছিলাম। ভালো লাগছিলো!

আজকে সকাল সকাল নিচে নামলাম। রাতে ইন্টারস্টেলার দেখসি। মাথা জ্ঞানের ভারে ব্যাথা করতেসে। কবি বলেছেন আনন্দ নিজের, কিন্তু ব্যাথা সবার সাথে ভাগ করে নিতে হয়। আমি তাই মাসুদরে খুঁজতেসি ব্যাথা ভাগ করে নেয়ার জন্য।

দেখি সে চেয়ারে বসে ঝিমাচ্ছে। গিয়া দিলাম চেয়ার বরাবর একটা লাথি।

মাসুদ নিচে পড়ে গিয়ে পিটপিট করে আমার দিকে চেয়ে আছে। আমার মুখে ভিলেনের হাসি দেখে তার মুখ শুকিয়ে গেছে।

– তোর জন্য একটা প্রশ্ন আছে। উত্তর দিতে পারলে আজকে দুপুরে কাচ্চি খাওয়াবো। আর না পারলে দুপুরে তোর খাবার বন্ধ।

কাচ্চির লোভে মাসুদ নাক দিয়ে একটা ঘোঁত শব্দ করল শুয়োরের মত।

– বলতো, পৃথিবীর বয়স কত?
– এইটা তো সোজা, এখন ২০২৪ সাল চলতেসে বস। তারমানে পৃথিবীর বয়স ২০২৪ বছর। মাসুদ অতি বিজ্ঞের মত মাথা নাড়ল।

আমার মুখে ভিলেনের হাসি। জানতাম সে পারবে না। সে কোনদিন বিসিএস এ পাশ করতে পারবে না।

– তুমি কোনদিন জ্ঞানী হতে পারবা না মাসুদ। যাও ওই কোনায় গিয়া কান ধরে দাঁড়ায় থাকো। গেইট দিয়েই যেই আসবে তাকে মিলিটারি স্টাইলে স্যালুট দিবা। এটাই তোমার শাস্তি।

– বস আমারতো মিলিটারি বুট নাই। মাসুদ করুন মুখে বলে।
– বুট লাগবো না হারামজাদা। তুই গিয়া দুপুর পর্যন্ত দাঁড়ায় থাক। নাইলে মিলিটারি স্টাইলে তোকে ডিম থেরাপি দিবো।

আমি গেইট দিয়ে বের হয়ে আসলাম। যাই গনিরে গিয়া জিগ্যেস করে আসি, দেখি সে বিসিএস এর যোগ্য কিনা। যদিও মনে হয় গনি পারবে না। রঙ চায়ে চিনি দিয়া জিহবায় কামড় দেয়া বাদে তার বিশেষ কোন প্রতিভা নেই। যদিও সে ভাব ধরে সে রাজনীতির ব্যপারে বিশাল পন্ডিত।

গনির দোকানে আজকে কোন ভিড় নাই। শুক্রবার সকালে কি মানুষজন চা খায় না? এই জাতির কি হবে? বৃহস্পতিবার রাতে সব নেশা করে এখন ঘুমাচ্ছে।

– গনি ভাই একটা রঙ চা দাও, চিনি দিবা না।
গনি কোন কথা না বলে চা বানান শুরু করল। চোখের নিচে ফোলা, কালসিটে পড়ে আছে। নিশ্চিত রাইতে মাল খাইতে গিয়া বউয়ের হাতে মাইর খাইসে।

– কে মারসে, বউ?

গনি কথা বলে না। চায়ে চুমুক দিয়া দেখি এইটা রসগোল্লার মত মিষ্টি। শালার চুষ্টি গুদি…।

– গনি ভাই, পৃথিবীর বয়স কত জানো?
– ঐটা জাইনা কি হইব? গরীব মানুষের পুটকি মারা বন্ধ করব সরকার?
– কখন মারল?
– মজা কইরেন না ভাই। মন ‘মিজাজ’ বেজায় খারাপ। সরকার যেমনে জিনিসপত্রের দাম বাড়াই দিতেসে… বউ বাচ্চা নিয়া শহরে আর থাকা যাইব না।

আমি জানতাম গনিও পৃথিবীর বয়স বলতে পারবে না। দেশটা অশিক্ষিতে ভরে গেছে, জ্ঞানী লোকেরা এই জন্যই দেশে থাকে না। টাকা পাচার করে বাইরে চলে যায়। লাস ভেগাস আর দুবাই তাদের প্রিয় জায়গা।

– কই যাবা?
– চিন্তা করতেসি গ্রামে চইলা যাবো।
– ঐখানে কি অন্য সরকার চলে? ওইখানে গেলে কি সরকার তোমার পুটু মারবে না?

গনি বিরক্ত মুখে তাঁকাল। তবে মুখে চিন্তার ছাপ। সরকার যে একটাই এইটা সে মনে হয় চিন্তা করে নাই। গ্রামে গিয়েও যে তাকে পুটু মারা খেতে হতে পারে এই ব্যাপার সে আগে চিন্তা করে নাই।

– তুমি বরং, চায়ের বদলে শরবত বেচা শুরু করো, মোহাব্বতের শরবত। দোকানের নাম দিবা, “গনি’স পেয়ার” মানে গনির ভালোবাসা।
– তাইলে চলব?
– আলবৎ চলবে। বাঙ্গালী এখন শরবতের দোকানে লাইন দেয়। আগে টাকা পরে ওয়ানটাইমে তোমার চা দিয়া দিবা। স্পেশাল মহব্বত।
– চা?

-“হ” – তোমার চা আর শরবতে কোন তফাৎ নাই। চা বইলা বেচো দেইখাই লোকজন আসে না।
– ভাইজান কি আমারে ইনসাল্ট করলেন? আমি চৌদ্দ বছর ধইরা চা বানাই।
– চৌদ্দ কেন চল্লিশ বছর ধরে বানাইলেও তুমি শরবতই বানাবা। জ্ঞানী লোকেরা চায়ে চিনি খায়না তুমি জানো না?

গনি জিহ্বায় কামড় দিল। “দেন আরেক কাপ বানায় দেই।”

– নাহ… আর খাবো না। যেই চা বিক্রেতা পৃথিবীর বয়স জানে না, তার ব্যবসার উন্নতি হবে কেমনে?
– জানি ভাইজান, পৃথিবীর বয়স ৪৫ বছর।
– কেমনে জানলা?
– আমার জন্মের পর থেকে পৃথিবী দেখতাসি, তাই আমার বয়সের সমানই পৃথিবীর বয়স।

আমি গনির এহেন দার্শনিক কথায় চমৎকৃত হলাম। মাঝে মাঝে সে অসোর (Osho) মত বালছাল যুক্তি দেয়। শুনলে মনে হয় সে মহাজ্ঞানী।

আমি গনির দিকে তাঁকিয়ে চোখ টিপে দিলাম।

– চালায় যাও গনি ভাই, তুমি মুরিদ পাবা। এখন আরেকটা প্রশ্নের জবাব দাও ভাইবা চিন্তা। মানুষের দেহে ফুটা কয়টা?

আমি চায়ের দাম না দিয়েই চিন্তিত গনিকে রেখে হাঁটা দিলাম। সে ফুটা গুনুক।

দিনটা সুন্দর। এইরকম দিন দেখেই কবি বলেছিলেন, মরিতে চাহিনা আমি এই বেয়াক্কেলদের ভুবনে।

– কাপু একজন জ্ঞানী পরিব্রাজক

এইটা খাবা... এইটা পিউর হালাল


ভূমিকম্প

ভূমিকম্প হয়ে গেল। তখন অজু করে মাত্র বাংলাদেশ দলের খেলা দেখতে বসছিলাম।

দোয়া করব আর টপাটপ উইকেট পড়বে…।

হঠাৎ মাথা ঘুরান্টি দিল দেখে ভাবলাম প্রেসার কমে গেছে। তিনটা ডিম আর দুই গ্লাস দুধ মেরে দিলাম।

একটু পরে নিউজ পেলাম আসলে ভূমিকম্প হয়েছে।

এখন কি করব চিন্তা করতেসি! প্রেসারের ঔষধ খাবো নাকি?

অলরেডি হালুয়া টাইট হওয়া শুরু হইসে।

– একজন ডাই হার্ট বাংলাদেশ ক্রিকেট ফ্যান

২রা জুন, ২০২৪

ট্রাফিক সিগন্যালে দাঁড়াতেই ট্রাফিক বন্ধু এগিয়ে এসে বললো, এই চোদনা কোথায় যাও?
আমি বললাম, বন্ধু এভাবে কথা বলে না।

তোমার কাগজ দেখাও।

কাগজ দেখাবো কেনো? আমিতো গাড়ি-বাইক কিছুই চালাচ্ছি না।

তাহলে হেলমেট পরে ঘুরতেসো কেন?

ওহ… ভুলে বাসা থেকে নিয়ে বের হয়ে গেছি। হাতে ব্যাথা তাই মাথায় পরে আছি।
“শালা তুমি আমাকে মামা বানাচ্ছো কেন? কাগজ দাও।” সবুজ বন্ধু রেগে গেলো।
আমি ড্রাইভিং লাইসেন্স আর গাড়ির কাগজ বের করে দিলাম।

বন্ধু এই কাগজতো তোমার দেখার কথা না। তোমার সার্জেন্ট বস কোথায়?

সার্জেন্ট ব্যাস্ত, হাদিয়া নিচ্ছেন। আমি কাস্টমার খুঁজতেসি, পারমিশন আছে।
অহ…। আমি মুচকি হাসি দিয়ে চোখ টিপে দিলাম।

হেলমেট পরে ঘুরবা না। তুমি কি রাজনীতি করো?

না বন্ধু, আমি মদনা জনগন। মাঝে মধ্যে সিদ্ধি খাই বাবার দরবারে গিয়া।

তোমার কথাবার্তা সন্দেহজনক। তুমি রাস্তায় থাকবা না।

“জ্বী জনাব… তথাস্তু” আমি লম্বা পা ফেলে হাঁটা দিলাম। গনির সাথে চায়ের মিটিং আছে। এই অর্বাচীনের সাথে সময় নষ্ট করে কোন লাভ নাই। আজকাল সত্যি কথার ভাত নাই।

গনির দোকানে এসে দেখি মেলা ভিড়। একজন ফ্রেঞ্চকাট দাড়িওয়ালা গনির চায়ের দুধ নিয়ে সন্দেহ পোষন করছেন। এইটা গরুর দুধ না।
গনি বেজায় খেপে আছে। সে বারবার বলছে, “আমি গরুর দুধ দিয়া চা বানাই না। আমার সব পাউডার মিল্ক।”
আমি হেলমেট পরা মাথা গলিয়ে দিলাম।

গনি ভাই ঠিক বলতেসে। গরুর দুধের চা ভালো হয়না। পাউডার মিল্কই উত্তম।
হেলমেট পরা আমাকে দেখে ভদ্রলোক বেজায় সন্দেহ নিয়ে তাঁকালেন।

আপনে কে মিয়া, গনির আত্মীয়?

নাহ, আমি কাষ্টমার…। গনি ভাই, সিদ্ধি দিয়া একটা রঙ চা দাওতো।
ভদ্রলোক চা খাবেন না বলে হাঁটা দিলেন। একবার পেছন ফিরে আমাকে ব্যাপক সন্দেহ নিয়ে দেখে নিলেন।

ভাই, চা খেয়ে যান। গরুর দুধেরটা মজার না, গাভীর হলে অবশ্য মজা পেতেন। আর পাউডারে একটা হেরোইন হেরোইন ভাব আছে।
তার হাঁটার গতি বেড়ে গেলো। সকাল সকাল পাগলের পাল্লায় পড়াটা দূর্ভাগ্যের।
গনি অবশ্য মুখ বাঁকা করে ফেলেছে। আমার কথাবার্তা তার পছন্দ না। হাজারহোক গনি একজন উচ্চমার্গীয় জ্ঞানি ব্যাক্তি। নেহাত সকাল বেলা সবার বউ চা বানায় দেয় না দেখে গনি জনসেবা করে যাচ্ছে।

কাপু উইথ লাভ ফ্রম রোড টু প্যারিস