ইফতার
ইফতারের পরে ব্রি সেবন করার জন্য মজিদের চায়ের দোকানে গেলাম। গিয়া দেখি মাসুদ। তাই তো কই গেইট ফাকা কেন। হালায় কাম রাইখা এইখানে আইসা আড্ডা দেস? আবার ব্রি খাস...?
পিছন থেকে কোমর বরাবর দিলাম এক লাথি। ফুটপাতে গড়ায় পড়ে গেলো। "কোন শা..." বলতে বলতে আমারে দেখে থেমে গেলো। পিট পিট করে দুইবার তাকায়া উইঠা দিলো দৌড়।
মজিদের কাছ থেকে মালবোরো নিয়া একটা সুখটান দিলাম। জিগাইলাম কিরে মজিদ মন খারাপ কেন?
- আমার সিগারেটের দামও ওর খাতায় লেইখা রাখ। শালারে বানাইতে হবে। বেয়াদব হয়ে গেসে।
মজিদরে কিছু বলার সুযোগ না দিয়া নাইমা আসলাম রাস্তায়। ফুটপাতে ব্যবসা করলে এইরকম হবেই। গরীব মাইনষের জাতই না। ট্যাক্স দিতে হবে ট্যাক্স...। ট্যাক্স না দিলে সরকার চলবে কেমনে? দেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে আমার দায়িত্ব আছে ট্যাক্স আদায় করার।
দুইটা লাল গেঞ্জি পরা পোলা দেখি রাস্তায় লোকজনরে ইফতার দিতেসে। ইফতারতো আধা ঘন্টা আগে শেষ, এখন কি দেয়?
আমিও বইসা গেলাম ফুটপাতে। আমার সামনে আসতেই হাত বাড়ায়া দিলাম। প্রথম জন আমারে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখতেসে। কাপড়চোপড় দেইখা মনে হয় ইফতারি দিবে না।
- দেস না কেন? আমারে দিতে মানা করসে?
দ্বিতীয় জন ভয় পেয়ে আমার হাতে একটা প্যাকেট ধরিয়ে দিল। যারা তুই তোকারি করে তাদের সাথে সাবধানে কথা বলতে হয়।
- প্যাকেটে কি? খুইলা দে। আমি খুলতে পারব না।
প্রথমজন এবার আমার প্যাকেট খুলে দিল তার চোখে ভয়।
- তোমারে দেখেই মনে হইতেসে রেস্টুরেন্টের ওয়েটার। এইগুলা ওইখান থেকে নিয়া আসছো? ভেজাল খাওয়াইয়া গরীব মারার ধান্দা।
"তোদের দুইটারে ভোক্তা অধিকারে ধরাইয়া দিয়া বিচি কান্দে তুলে ফেলতে হবে।"
দুই লাল গেঞ্জিও দৌড় দিল। শালা বেকুব। জগিং টাইম সকালবেলা ইফতারির পরে দৌড়াবি কেন?
আমি আরামসে ফুটপাতে বসে বসে বেগুনি আর আলুর চপ খাচ্চি। প্যাকেটে একটা জিলাপিও আছে দেখি। নাহ... জিলাপি খাওয়া যাবে না, সুগার বেড়ে যাবে। পরে লোকে সুগার ড্যাডি ডাকবে।
দুইটা খেজুর আছে, ল্যাটকাইয়া ভর্তা হয়ে গেছে। এইগুলা প্যাকেট সহ পকেটে রেখে দিলাম। মাসুদরে দিয়া দিবো। সারাদিন কি খায় না খায়।
-কাপু